নানা অঞ্চলের রান্না
ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যাওয়া হোক বা না হোক, নানা অঞ্চলের মজাদার সব রান্না এবার খেতে পারবেন বাড়িতে বসেই।
খুলনার রান্না
চুইঝালে মাংস ভুনা
উপকরণ: গরুর মাংস ২ কেজি, চুইঝাল মাঝারি টুকরা করে কাটা ২ কাপ, আদাবাটা ২ টেবিল-চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল-চামচ, মরিচগুঁড়া ১ টেবিল-চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরাবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, লবণ স্বাদমতো, টকদই আধা কাপ, তেজপাতা ৪টি, দারচিনি ৪ টুকরা, এলাচ ৪টি, লবঙ্গ ৬টি, কাঁচা মরিচ ৫-৬টি, সরিষার তেল ১ কাপ, গরম মসলার গুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরা ভাজা গুঁড়া আধা চা-চামচ।
প্রণালি: মাংস ধুয়ে লবণ ও টকদই দিয়ে মাখিয়ে ১ ঘণ্টা রাখুন। তেল গরম করে পেঁয়াজ ভেজে তাতে সব মসলা কষিয়ে মাংস ও চুইঝাল দিয়ে কয়েকবার কষান। পরে পানি দিন। মাংসের ঝোল শুকিয়ে তেলের ওপর এলে গরম মসলার গুঁড়া, জিরা ভাজা গুঁড়া দিয়ে নামান।
চুয়াডাঙ্গার রান্না
হাঁড়ি কাবাব
উপকরণ: হাড়ছাড়া গরুর মাংস ১ কেজি, টকদই সিকি কাপ, কাঁচা পেঁপে বাটা বা কষ ১ টেবিল-চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, আদাবাটা ১ টেবিল-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, জিরাবাটা ১ চা-চামচ, ধনেবাটা ১ টেবিল-চামচ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজকুচি আধা কাপ, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, গরম মসলার গুঁড়া ১ চা-চামচ, জায়ফল ও জয়ত্রি গুঁড়া আধা চা-চামচ, দারচিনি ৪ টুকরা, এলাচ ৪টি, তেজপাতা ২টি, লেবুর রস ১ টেবিল-চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা পৌনে এক কাপ, লবণ স্বাদমতো, তেল আধা কাপ, চিনি আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ৬-৭টি।
প্রণালি: মাংস পাতলা করে কেটে সব বাটা মসলা ও দই দিয়ে মাখিয়ে ১ ঘণ্টা রাখুন। চুলায় দেওয়ার আগে সেই মাংস লবণ ও পেঁপের কষ দিয়ে মাখান। তেল গরম করে পেঁয়াজ ভেজে তাতে মাখানো মাংস, তেজপাতা, দারচিনি, এলাচ দিয়ে ভালো করে কষান। মাংস তেলের ওপর এলে লেবুর রস, কাঁচা মরিচ, জায়ফল-জয়ত্রি গুঁড়া, গরম মসলা গুঁড়া, বেরেস্তা দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে নামান।
কুষ্টিয়ার রান্না
নারকেলের দুধে কাটা মসলার মাংস
উপকরণ: গরু বা খাসির মাংস ২ কেজি, পেঁয়াজকুচি ২ কাপ, রসুনকুচি ১ টেবিল-চামচ, আদা মিহি কুচি ৩ টেবিল-চামচ, আস্ত রসুন ৮-১০টি, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ, লবণ স্বাদমতো, আধা ভাঙা গোলমরিচ ১ চা-চামচ, শুকনা মরিচ ৮-১০টি, সরিষার তেল ১ কাপ, তেজপাতা ৪টি, দারচিনি ৬ টুকরা, এলাচ ৬টি, লবঙ্গ ৮টি, টকদই আধকাপ, কাঁচা মরিচ ৭-৮টি, চিনি ১ চামচ বা স্বাদমতো, নারকেলের দুধ ৬ কাপ।
প্রণালি: মাংস টুকরা করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে বেরেস্তা, কাঁচা মরিচ, নারকেলের দুধ বাদে বাকি সব উপকরণ দিয়ে মাখিয়ে ২-৩ ঘণ্টা রাখতে হবে। এরপর নারকেলের দুধ দিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না করতে হবে। মাংস সেদ্ধ হয়ে ঝোল কমে এলে বেরেস্তা, কাঁচা মরিচ দিয়ে অল্প জ্বালে কিছুক্ষণ চুলায় রেখে নামাতে হবে।
কুমিল্লার রান্না
আনাজ-মাংসের কাবাব
উপকরণ: মাংসের সেদ্ধ কিমা ১ কেজি, কাঁচা কলা ৪টি, আদাবাটা আধা টেবিল-চামচ, রসুনবাটা আধা চা-চামচ, পেঁয়াজবাটা ১ টেবিল-চামচ, কাঁচা মরিচ বাটা ২ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, গরম মসলার গুঁড়া ১ চা-চামচ, ডিম ফেটানো একটি।
প্রণালি: কলা সেদ্ধ করে খোসাসহ বেটে নিন। এবার সব উপকরণ একসঙ্গে মাখিয়ে চুলায় দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। ঠান্ডা হলে একসঙ্গে ভালো করে মাখিয়ে গোল গোল চ্যাপ্টা কাবাব করে ফেটানো ডিমে ডুবিয়ে গরম তেলে ভেজে নিন।
দিনাজপুরের রান্না
হাঁড়িবন্ধ
উপকরণ: গরুর চর্বিসহ মাংস ৫ কেজি, পেঁয়াজ মোটা কুচি ৬ কাপ, আদা মিহি কুচি ১ কাপ, রসুনের কোয়া ১ কাপ, শুকনা মরিচ ফালি আধা কাপ, গোলমরিচ গুঁড়া ১ টেবিল-চামচ, টকদই ২ কাপ, মিষ্টিদই আধা কাপ, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল ৪ কাপ, তেজপাতা ৬টি, দারচিনি ১০ টুকরা, ছোট এলাচ ১০টি, লবঙ্গ ১২টি, বড় এলাচ ৪টি, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি।
প্রণালি: চর্বিসহ মাংস বড় টুকরা করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে বড় হাঁড়িতে সব উপকরণ দিয়ে মাখিয়ে নিন। হাঁড়ি ভরে পানি দিন। ময়দা পানি দিয়ে মথে হাঁড়ির চারপাশে লাগিয়ে ঢাকনা দিয়ে এমনভাবে ঢেকে দিন যেন বাষ্প বের হতে না পারে।
এবার হাঁড়ি চুলায় দিয়ে মাঝারি জ্বালে রান্না করুন। ভালো করে ফুটে উঠলে চুলা থেকে নামিয়ে রাখুন। প্রতিদিন দুবার করে ফোটান। এভাবে ঝোল শুকিয়ে তেলের ওপর এলে আধা কাপ বেরেস্তা ও ১ চা-চামচ গরম মসলার গুঁড়া দিয়ে নামান।
মজাদার হাঁড়িবন্ধ পোলাও, ভুনা খিচুড়ি, পরোটার সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করা যায়।
ঢাকাই রান্না
বিরিয়ানি
উপকরণ: ১. খাসির মাংস ২ কেজি, টকদই ১ কাপ, মিষ্টিদই সিকি কাপ, পেঁয়াজবাটা আধা কাপ, আদাবাটা ২ টেবিল-চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল-চামচ, শাহি জিরাবাটা ১ চা-চামচ, দারচিনি ৪ টুকরা, এলাচ ৪টি, লবঙ্গ ৬টি, তেজপাতা ৪টি, আলুবোখারা ৮টি, শুকনা মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল আধা কাপ, বেরেস্তা আধা কাপ, গরম মসলার গুঁড়া ১ চা-চামচ, জায়ফল-জয়ত্রি গুঁড়া আধা চা-চামচ।
প্রণালি: মাংস ধুয়ে পানি ঝরিয়ে সব উপকরণ দিয়ে মাখিয়ে ২ ঘণ্টা রেখে দিন। এবার মাঝারি আঁচে কষিয়ে পরিমাণমতো পানি দিয়ে মাংস রান্না করুন। মাংস সেদ্ধ হয়ে তেলের ওপর এলে বেরেস্তা, জায়ফল-জয়ত্রি গুঁড়া, গরম মসলার গুঁড়া দিয়ে নামান।
উপকরণ: ২. আধা কেজি আলু ঘি দিয়ে ভেজে আধা সেদ্ধ করে নিতে হবে।
উপকরণ: ৩. পোলাওয়ের চাল ১ কেজি, পেঁয়াজবাটা ২ টেবিল-চামচ, আদাবাটা ১ টেবিল-চামচ, পোস্তদানাবাটা ১ টেবিল-চামচ, বাদামবাটা ১ টেবিল-চামচ, টকদই আধা কাপ, মালাই আধা কাপ, লবণ স্বাদমতো, বেরেস্তা ১ কাপ, কিশমিশ ১ টেবিল-চামচ, পেস্তা বাদামকুচি ২ টেবিল-চামচ, দারচিনি ৬ টুকরা, এলাচ ৬টি, লবঙ্গ ৮টি, কেওড়ার জল পৌনে এক কাপ, কাঁচা মরিচ ৮-১০টি।
প্রণালি: চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন, কেওড়ার জলে জাফরান ভেজান। অন্য হাঁড়িতে ঘি গরম করে সব মসলা কষিয়ে চাল দিয়ে ভাজুন। এবার এতে ৫ কাপ গরম পানি দিয়ে লবণ, দই দিয়ে ঢেকে দিন। পানি কমে এলে দুধের সঙ্গে পোস্তদানা ও বাদামবাটা গুলিয়ে পোলাওয়ে দিয়ে অল্প জ্বালে ২০ মিনিট রাখুন। হাঁড়িতে অর্ধেক পোলাও উঠিয়ে দুই স্তরে মাংস, পোলাও, মালাই, আলু, কাঁচা মরিচ, বেরেস্তা, কিশমিশ, পেস্তা বাদাম, কেওড়ার জলে ভেজানো জাফরান দিয়ে সাজিয়ে হাঁড়ির মুখ বন্ধ করে ৩০ মিনিট দমে রাখুন। নামিয়ে পরিবেশন।