বাচ্চা হওয়ার মাশুল ৮ কোটি টাকা!
সন্তান জন্মালে প্রত্যেক বাবা-মা কত খুশি হন। কিন্তু কখনো কি শুনেছেন সন্তান জন্মদানের পিতা-মাতাকে অখুশি হতে। হ্যাঁ এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পিতা-মাতা অখুশি না হলেও চরম বিভ্রান্তি আর হতশায় জীবনযাপন করছেন তারা।
গত বছর অক্টোবরে এক কানাডিয়ান দম্পতি হাওয়াইয়ে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন। সেখানে জেনিফার হুকুল্যাক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। গর্ভবতী ছিলেন জেনিফার। ছয় সপ্তাহ হাসপাতলে ভর্তি থাকার পর প্রিম্যাচিয়োর সন্তানের জন্ম দেন তিনি। তাদের সন্তান রিককে আরও দুমাস ইনটেনসিভ কেয়ারে রাখা হয়। অনুমান করুন এরপর কত বিল করতে পারে হাসপাতাল? না, পরিমাণটা ভুল বললেন। বিল হয়েছিল ৯৫০,০০০ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় ৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এবার ভাবুন বিদেশে এসে এত টাকা জোগাড় করবেন কী করে এই দম্পতি।
ট্যুরে আসার আগে ব্লু ক্রস বীমা কোম্পানীর কাছে ট্রাভেল বীমা করিয়েছিল তারা। জেনিফারে শরীর অসুস্থতা থাকার সত্ত্বেও বীমা কোম্পানি আশ্বস্ত করেছিল ট্রাভলের সময় যেকোনও শরীর খারাপে চিকিৎসার খরচ পাবেন। ড্যারেন যোগাযোগ করেন বীমা কোম্পানীর সঙ্গে। কিন্তু তারা অস্বীকার করেন এত টাকা দেবার। বীমা কোম্পানী জানায়, জেনিফারের সন্তানের জন্য কোনও চিকিৎসার খরচ দেবে না। এছাড়াও তাদের বীমার মেয়াদ শেষ হয়ে যায় ৯ নভেম্বর ২০১৩। তাদের সন্তানের জন্ম হয় ১০ ডিসেম্বর ২০১৩।
তাহলে উপায়! এই খবর সংবাদমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ব্লু ক্রস বীমা কোম্পানী নড়চড়ে বসে। কোম্পানী সংবাদমাধ্যমকে জানান, "আমরা পুর্ণবিবেচনা করে দেখছি তাঁদেরকে কীভাবে সাহায্য করা যায়। কারণ আমাদের টার্ম এ্যান্ড কন্ডিশনে শিশুর চিকিৎসার খরচ দেওয়া আমাদের সম্ভব নয়"।
তাদের করুণ অবস্থা দেখে হাসপাতাল কতৃপক্ষ বিল থেকে ২৪ লক্ষ টাকা ছাড় দেয়। কিন্তু এতে যে তাদের সমস্যা মিটবে না দম্পতি ভালভাবেই জানেন। সস্কাচিয়ান সরকারের কাছে সাহায্যের অনুরোধ করলে সরকারের তরফ থেকে সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। এরপর হাত পাততে হয় জনসাধারণের কাছে। কিন্তু ধার এখনও মেটেনি। তাদের সন্তান রিকের বয়স এখন প্রায় এক বছর। আর মাথায় ঋণের বোঝা কোটি টাকার। হাসপাতাল কতৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া হয়ত কোনও উপায় নেই এই দম্পতির।