নকল গাঁজা তৈরি করছে চীন, উদ্বিঘ্ন যুক্তরাষ্ট্র!
নকল কিছু দেখলেই অনেকেই বলে উঠে, চায়না জিনিস। আবার এও বলে- 'চায়না...বেশিদিন যায় না'। তবে মূল কথা হচ্ছে বিশ্বের নামী-দামী ব্রান্ডের পন্য যেমন চীনে তৈরি হচ্ছে, তেমনি কমদামে এর নকলও তৈরি হচ্ছে চীনে। তাদেরকে শুধু মডেল আর বাজেট দিয়ে দিলে হলো। তার মধ্যেই একটা সমাধান তারা বের করে ফেলবে। নকল ইলেকট্রনিক্স পণ্য, নকল ডিম, নকল চাল থেকে শুরু করে হেন জিনিস নেই যা তৈরি করেনি চীন। তবে এবার যে পণ্যটি তারা নকল করেছে, তা শুনলে হাসিও আসতে পারে, আপনি কিছুটা ধন্যবাদও তাদের দিতে পারেন। পন্যটি হচ্ছে গাঁজা, যা আমাদের মতো অনেক দেশেই মাদক হিসেবে স্বীকৃত।
এবার চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নকল গাঁজা তৈরি করে তা সরবরাহ করছে যুক্তরাষ্ট্রে। আর এটি উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে খোঁদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্যে গাঁজা বিক্রি ও সেবন বৈধ। সেখানে প্রকাশ্যে বিভিন্ন দোকানে প্যাকেটজাত গাঁজা পাওয়া যায়। এবার সেই প্যাকেটেই ঢুকে পড়েছে চীনের তৈরি নকল গাঁজা।
যুক্তরাষ্ট্রের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ প্রশাসনের প্রধান চাক রোজেনবার্গ বলেন, সারা দেশে এটা ছড়িয়ে পড়ছে। প্রাথমিকভাবে এই নকল গাঁজার উপকরণ চীন থেকে আমদানি করা হয়। রং বদলাতে সক্ষম এই উপকরণের দাম কম আর এতে আছে কৃত্রিম উপাদান।
চাক রোজেনবার্গ আরও বলেন, এই গাঁজার মাত্রায় হেরফের আছে। রাসায়নিকও হয় ভিন্ন। প্যাকেট একই হলেও প্রতিক্রিয়ায় ব্যাপক ব্যবধান দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ ও জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, দেশজুড়ে নকল গাঁজার নাটকীয় বিস্তারে মাদক-সংক্রান্ত অসুস্থতা ও অপরাধ বেড়ে গেছে।
আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব পয়জন কন্ট্রোল সেন্টারসের তথ্য অনুযায়ী, সুনির্দিষ্টভাবে নকল গাঁজার ব্যাপারে তারা চলতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৫ হাজারের বেশি ফোনকল পেয়েছেন। গত বছরের চেয়ে এই সংখ্যা অনেক বেশি।
মাদকবিরোধী একটি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, নকল গাঁজায় তীব্র উদ্বেগ, কামনা, ভ্রম, আতঙ্ক, বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি প্রভৃতি তৈরি হয়। নকল গাঁজায় আসক্তির ক্ষমতা বেশি এবং তা প্রাণঘাতীও হতে পারে। এর মাত্রা তীব্র।
যুক্তরাষ্ট্রে মোড়ের দোকান, গ্যাস স্টেশন, বিড়ি-সিগারেটের দোকানসহ অনেক স্থানেই গোপনে এই গাঁজা বিক্রি হয়। এ ছাড়া অনলাইনে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে চলে রমরমা কেনাকাটা।
মিশিগান ইউনিভার্সিটির ২০১২ সালের এক জরিপে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্বিতীয় জনপ্রিয় নেশা কৃত্রিম গাঁজা।