৬শ’ কোটি রুপি দান করে হয়েছেন সন্ন্যাসী

Rate this item
(1 Vote)

গৌতম বুদ্ধ পরমার্থের সন্ধানে ঘর ছেড়েছিলেন। মহাত্মা মনীষীদের গৃহত্যাগের বর্ণনা যুগে যুগে লোকমুখে প্রচারিত হয়েছে। বইয়ের পাতায় লিপিবদ্ধ হয়েছে। তবে এই যুগে এসে এমন দৃষ্টান্ত বোধহয় বিরলই। 

সেই বিরল দৃষ্টান্তটি স্থাপিত হয়েছে গতকাল রোববার দুপুরে। দিল্লির বিলিয়নিয়র ব্যবসায়ী বনওয়ারলাল রঘুনাথ দোশি তাঁর উপার্জিত ৬০০ কোটি রুপির সম্পত্তিকে পেছনে ফেলে রেখে, জৈন ধর্মে দীক্ষা নিয়ে সন্ন্যাস জীবন গ্রহণ করেছেন। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দোশি তাঁর প্লাস্টিকের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির জন্য ‘ভারতের প্লাস্টিক কিং’ নামে খ্যাতিমান ছিলেন।

বিলাস ব্যাসনের জীবন ছেড়ে ত্যাগীর জীবন গ্রহণের অনুষ্ঠানে কমতি ছিল না ধুমধামের। আহমেদাবাদ এডুকেশন গ্রাউন্ডে জৈন ধর্মে ঐতিহ্যবাহী ‘সংযম জাহাজ’-এর আদলে বিভিন্ন দুর্লভ ফুল আর স্বর্ণ দিয়ে সাজানো হয়েছিল দোশির দীক্ষাগ্রহণের স্থান।বর্তমান জৈন আচার্য শ্রীগনরতœ সুরিশওয়ার্জি মহারাজ দীক্ষা দেন রঘুনাথ দোশিকে। জানা গেছে দীক্ষা নেয়ার পর প্লাস্টিক কিং বিলিয়নিয়র দোশি, ভাব্যরতœ বিজয় মহারাজ নামে পরিচিত হবেন।

রাজকীয় এই দীক্ষার সাক্ষী ছিলেন দেড় লাখ দর্শক আর এক হাজারের বেশি জৈন সাধু। এ ছাড়া আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানিসহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিও দীক্ষা গ্রহণের সময় উপস্থিত থেকে সম্মান জানিয়েছেন নতুন সাধুকে। পুরো অনুষ্ঠানের খরচ পড়েছে ১০০ কোটি রুপি। আর এই অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক ছিল দোশির প্রতিষ্ঠানই।

টাইমস অব ইন্ডিয়া সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮২ সালে জৈন ধর্মের এক বক্তৃতা শোনার পর এতে অনুপ্রাণিত হন রঘুনাথ দোশি। তখন থেকেই তিনি সন্ন্যাস গ্রহণের ইচ্ছার কথা জানান পরিবারকে। কিন্তু পরিবারের মোটেই সায় ছিল না এতে। অনেক কাকুতি মিনতির পর, গত বছর তাঁর ৬০তম জন্মবার্ষিকীতে পরিবার এই সিদ্ধান্তে সায় দেয়। এরপর দোশি তাঁর বিশাল সম্পদের অর্ধেক দান করে দেন জৈন সেবালয়ে, আর বাকি অর্ধেক পরিবার ও পোষ্যদের মধ্যে ভাগ করে দেন।

দীক্ষা নেয়ার আগের দিন গত শনিবার প্রথা অনুযায়ী বিশাল পদযাত্রা করে দীক্ষাগ্রহণের স্থানে যান রঘুনাথ দোশি। ঐতিহ্যবাহী জৈন ধর্মের বাদ্যযন্ত্রের সুরকে সঙ্গী করে, সাত কিলোমিটার পথ হাঁটেন তিনি। এ পদযাত্রায় তাঁর সাথে ছিলেন, এক হাজার জন জৈন সাধু। আরো ছিল ঘোড়াচালিত ১২টি রথ, নয়টি হাতি ও নয়টি উটের গাড়ি।

সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য ভারতে এ রকম দৃষ্টান্ত আছে আরো একটি। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসেই ভোগ-বিলাসের জীবন ছেড়ে সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর জীবন বেছে নিয়েছিলেন মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতার ফাইনালিস্ট বরখা মদন।

0 awesome comments!
Scroll to Top