১৭ প্রেমিকার সঙ্গে একযোগে প্রেম, অতঃপর...
প্রেমিক বটে! একসঙ্গে ১৭ প্রেমিকার সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এদের একজনের ঘরে আবার তার এক সন্তানও রয়েছে। লুকোচুরি করে মোটামুটি নিজের সব প্রেমই ঠিকঠাক রক্ষা করে চলছিলেন ইউয়ান নামের ওই চীনা যুবক। কিন্তু কথায় আছে, 'সাতদিন চোরের, একদিন গৃহস্থের'। একটি সড়ক দুর্ঘটনা কাল হয়ে দাঁড়াল তার জন্য। দুর্ঘটনা খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এলেন ১৭ প্রেমিকা। তাতেই ফাঁস হয়ে যায় তার সমস্ত কেলেঙ্কারি। মজার বিষয় হলো, সব প্রেমিকাই প্রায় একই সময়ে হাজির হয়েছিলেন হাসপাতালে! এবার সমবেদনার বদলে ১৭ নারীর আক্রোশের মুখে পড়েন ইউয়ান। অবশেষে পুলিশের সহায়তায় শেষ রক্ষা হয়।
ঘটনাটি বেশ কিছুদিন আগের। ওই রোমিওর বাড়ি চীনের হুনান প্রদেশের চাংশায়। ২৪শে মার্চ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ডাক্তার তার ফোন নম্বর ঘেটে আত্মীয়দের কাছে এ দুর্ঘটনার খবর দেন। এতে তার ১৭ প্রেমিকাই হাসপাতালে আসতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর তারা সকলেই বুঝতে পারেন তাদের সবার প্রেমিক আসলে একজনই। আর তিনি হলেন ইউয়ান!
১৭ প্রেমিকার একজনের নাম শিয়াও লি। তিনি বলেন, আমি তার সঙ্গে প্রায় দেড় বছর ধরে থাকছি। তার দুর্ঘটনার খবর শোনার পর আমি প্রচুর কেঁদেছি। এতটাই কেঁদেছি আমার চোখে কোন অশ্রু বাকি রাখিনি। আমি সত্যিই উদ্বিগ্ন হয়ে গিয়েছিলাম, যখন শুনেছি যে, সে হাসপাতালে। কিন্তু যখন আমি দেখলাম, তাকে দেখতে আরও সুন্দর সুন্দর মেয়েরা আসতে শুরু করেছে, তখন আসলেই আমি কাঁদার শক্তি হারিয়ে ফেলেছি! শিয়াও জানান, তিনি এ ঘটনার পর ওই ১৭ প্রেমিকাকে নিয়ে একটি অনলাইন চ্যাট ওয়েবসাইটে গ্রুপ খোলেন। সেখানে সবার সঙ্গে আলোচনা করে শিয়াও জানতে পারেন, ইউয়ানের কয়েকজন প্রেমিকা তাকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করতেন। অনেকেই আবার মোটা অংকের অর্থ দিয়েছেন তাকে। এদের একজন প্রায় ৯ বছর ধরে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে আসছেন ইউয়ানকে! ওয়াং ফাং নামের আরেকজন প্রেমিকা বলেন, 'আমাদের ইতোমধ্যেই এক সন্তান হয়েছে। আমি এখন কি করবো? আমি তাকে আর ভালবাসি না। কিন্তু আমি আমার সন্তানকে অনেক ভালবাসি।'
শিয়াও টিং নামের আরেক প্রেমিকা বললেন, তিনি বিশ্বাস করতেন, তার জন্য ইউয়ানই ছিল সঠিক। এমনকি তাকে বিয়ের পরিকল্পনাও করছিলেন শিয়াও টিং। তবে তার আগেই সব গোমর ফাঁস! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ খবর প্রকাশের পর প্রায় ৬ হাজার মন্তব্য এসেছে! কেউ কেউ ওই 'রোমিও'র এমন জোচ্চুরিতে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। কেউ আবার বলছেন, নারীদের আরও বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করা উচিত ছিল। ইউয়ানের জোচ্চুরি আরও আগেই ধরা উচিত ছিল তাদের।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রেমিকার প্রতি ইউয়ান কেবল একটি কাজই করেছে। তা হলো, প্রেমিকাদের সৌন্দর্যের প্রশংসা করা। আর এতেই তারা পটে যান। নিজের মন, প্রাণ, শরীর সবকিছু উৎসর্গ করে দেন।
ইন্ডিপেন্ডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউয়ান মূলত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই এসব করেছেন। তার এক স্ত্রীর কাছ থেকে আড়াই লাখ ২৭ হাজার ডলার হাতিয়েছেন তিনি। এছাড়াও প্রেমিকাদের কাছ থেকে হাতিয়েছেন হাজার হাজার ডলার। ইউয়ান নিজেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক দাবি করতেন প্রেমিকাদের কাছে। বাস্তবে তিনি একজন সামান্য ডিপ্লোমাধারী।